
অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ মারা গেছেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ আর নেই। আজ শুক্রবার (১৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। আজ বাদ জোহর তার দাফন হওয়ার কথা রয়েছে।
রাত আড়াইটার দিকে এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় স্ট্রোক করেন অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ। গত রাতে প্রচন্ড বুকে ব্যথা নিয়ে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। অবস্থার অবনতি হলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে আইসিইউতে নেয়া হয়। পরে ভোর পৌনে ৬ টার দিকে অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ মারা গেছেন।
অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ ১৯৩২ সালের ১৫শে ডিসেম্বর তৎকালীন ভারতের মালদহ বর্তমান চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে বেড়ে ওঠেন তিনি। শিবগঞ্জের আদিনা সরকারি ফজলুল হক কলেজ ও রাজশাহী কলেজে পড়ালেখা করেছেন।
সরকারি কলেজে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু হয় ড. এমাজউদ্দিনের। ভাষা আন্দোলন পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রনেতাকে কারাবরণ করতে হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এবং উপাচার্য হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষ একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। একুশে ও স্বাধীনতা পদক জয়ী এই শিক্ষাবিদ।
আরো পড়ুন- শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য নিরসন সময়ের দাবি
সত্তরের দশকে স্কলারশীপ নিয়ে কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটি অব অন্টারিও থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পরে দেশে ফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন। পরে একই বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন। উপাচার্য হওয়ার আগে প্রায় দুই মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৯২ সালের ১ নভেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের ৩১শে আগস্ট পর্যন্ত তিনি উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি অবসরে যান। পরে ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভে (ইউডা) উপাচার্য হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি, বাংলাদেশের রাজনীতি, তুলনামূলক রাজনীতি, প্রশাসন-ব্যবস্থা, দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক বাহিনী সম্পর্কে গবেষণা করেন। তার লিখিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় অর্ধশতাধিক।
লিখিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: রাষ্ট্র বিজ্ঞানের কথা (১৯৬৬), জাতীয় নিরাপত্তা (১৯৯৯), গণতন্ত্রের ভবিষৎ (১৯৯৪), শান্তি চুক্তি ও অন্যান্য প্রবন্ধ (১৯৯৮), মধ্যযুগের রাষ্ট্র চিন্তা (১৯৪৫), আঞ্চলিক সহযোগিতা, তুলানামূলক রাজনীতি: রাজনৈতিক বিশ্লেষণ (১৯৮২), বাংলাদেশে গণতন্ত্র সংকট (১৯৯২), সমাজ ও রাজনীতি (১৯৯৩), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য প্রবন্ধ (২০০০)।
শিক্ষাক্ষেত্রে অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ১৯৯২ সালে একুশে পদক ও অন্য আরেক বছর স্বাধীনতা পদক পান অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ।
শিক্ষার সকল খবর পেতে Shikkhapedia.com এর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে যুক্ত থাকুন।
সবসময় রিয়েল টাইম নিউজফিড পেতে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন
[…] অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ মারা গেছেন […]