Home মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় আমার বিরুদ্ধে যা লেখার লেখ’

আমার বিরুদ্ধে যা লেখার লেখ’

আমার বিরুদ্ধে যা লেখার লেখ’

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের চূড়ান্ত ফলাফল পরীক্ষা শুরুর ১৬ মাসেও প্রকাশ করা হয়নি। এতে করে ‘অসুবিধায় পড়েছেন’ শিক্ষার্থীরা।

চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে দেরির কারণ জানতে গণমাধ্যমকর্মীরা যোগাযোগ করেন অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদের সঙ্গে। উত্তরে তিনি সাংবাদিককে বলেন, ‘তুমি কি ভাইস-চ্যান্সেলর? আমার বিভাগ আমি বুঝব, আমার বিরুদ্ধে যা লেখার লেখ, যাও।’

জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া ওই পরীক্ষা করোনায় স্থগিত হলে পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারিতে সম্পন্ন করা হয়। ছয়টি কোর্সের এই পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১২ মাসে শেষ হলেও ১৬ মাস গড়িয়ে গেলেও ফলাফল এখনো প্রকাশ হয়নি। এর মাঝে একই বিভাগে চলতি বছর জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়া স্নাতক শেষ সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হওয়ার দুই সাপ্তাহের মধ্যে ফল প্রকাশিত হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। ফল প্রকাশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘ডিপার্টমেন্টের সদিচ্ছার অভাবেই ফল প্রকাশে কালক্ষেপণ হচ্ছে। এ জন্য নানা ধরনের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। কেউ কেউ বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরিরত। মাস্টার্সের রেজাল্ট দেখাতে না পারায় কোনো পদোন্নতি পাচ্ছে না। ফলে সময় ও অভিজ্ঞতা বাড়লেও চাকরি শুরু করার সময়কার পদবি আর বেতনেই চাকরি করতে হচ্ছে এখনো।’

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ফলাফল প্রকাশে কালক্ষেপণের কারণ জানতে ফোন করা হয় অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদকে। এ সময় নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সহসভাপতি ও দেশ রুপান্তরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক হিমেল শাহরিয়ারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এই অধ্যাপক।

এর আগে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে ওই ব্যাচের কোর্স কো-অর্ডিনেটর মাহিন রেজাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘বিভাগের চেয়ারম্যান এসব ব্যাপারে জানেন।’ পরবর্তীতে অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘তুমি কি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর হইছো নাকি?

তুমি কি বলবা, আমাকে আমার টিচার ফোন করছে আমি জানি। কোন ডিপার্টমেন্ট কবে রেজাল্ট হইছে না হইছে, এত কিছু তোমরা জানতে চাও কি শুরু হইছে এগুলো?’ওই সাংবাদিক শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এই অধ্যাপক বলেন, ‘কোন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছে আমার ডিপার্টমেন্টের, নাম বলো।’ আবার প্রশ্ন ছুড়ে তিনি বলেন, ‘তুমি কি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর?’

অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ আরও বলেন, ‘আমার বিভাগের সেই শিক্ষার্থীরা অলরেডি থিসিস করতেছে, টিচাররা যেতে পারে না রেজাল্ট দিতে।

তুমি দেখতেছ যে, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ! প্রথম কাজ হচ্ছে সরকার। তোমরা প্রত্যেকটা বিষয়ে নিয়ে এত বাড়াবাড়ি করতেছ কেন? আমি আমার ডিপার্টমেন্টের রেজাল্ট দিয়ে দেব। এটা আমার বিষয় আমি বুঝব, ঠিক আছে?’

তিনি বলেন, ‘পরবর্তী পরীক্ষা শুরুর আগে রিজাল্ট দিয়ে দেব। কে অভিযোগ করেছে, সে লিখিত অভিযোগ আমাকে দেখাও।

অভিযোগ করবে কারা! আমার ডিপার্টমেন্টের কোনো ছাত্র তোমাদের মতো সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করবে-এটা আমি মনে করি না।’ফলাফল প্রকাশ করতে চার মাস বিলম্ব করা নিয়মের মধ্যে পড়ে কি না, জানতে চাইলে বিভাগের চেয়ারম্যান বলেন, ‘পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অন্য জায়গায় এবং শিক্ষকরা ডিপার্টমেন্টে যেতে না পারার কারণে মডারেশন করা যায়নি। লকডাউন উঠে গেলে ২-৩ দিনের মধ্যেই ঈদের আগে রেজাল্ট পাবলিশ করা হবে।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদের ‘অশোভন’ আচরণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. দিদার-উল-আলম বলেন, ‘সাংবাদিকের সাথে তার এমন প্রতিক্রিয়া দেখানো ঠিক হয়নি। রেজাল্ট দিতে অসুবিধা কোথায় সেটা সুন্দর মতো বুঝিয়ে বললেই হতো। কেন রেজাল্ট দিতে দেরি হচ্ছে এবং এই শিক্ষক কেন এমন আচরণ করল, বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেখবে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here