
একটি দেশ ও জাতিকে উন্নয়নের শীর্ষে নিতে হলে উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার খুবি প্রয়োজন। মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে শিক্ষার মান উন্নয়ন করতে পারলে একটি জাতি খুবই দ্রুত অগ্রসর হয়। বিশ্ব শিক্ষায় এক্ষেত্রে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে কিছু দেশ। আজ উন্নত বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থার ভিন্নতা নিয়ে শিক্ষাপিডিয়া পাঠকদের জন্য কিছু তথ্য দেয়া হলো-
ফিনল্যান্ড

পৃথিবীর সবচেয়ে চমৎকার শিক্ষাব্যবস্থা দেশগুলোর মধ্যে প্রধানতম হল ফিনল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থা। বাস্তব ও বিজ্ঞান সম্মত শিক্ষা ব্যবস্থার দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে ফিনল্যান্ড। প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় দেশটির বিশ্বসেরা হওয়ার দৌড়ে কাজ করছে গেমিং এডুকেশন বা খেলার মাধ্যমে শিক্ষা পদ্ধতি। নেই কোন পাঠ্যপুস্তকের ঝামেলা নেই কোন পরীক্ষার বালাই। ১৬ বছর বয়সে গিয়ে মাত্র একটি বাধ্যতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। ফিনল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থায় সমস্ত সুযোগ-সুবিধা বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। দুপুরের খাবার, টিফিন, বই-খাতা ,স্টেশনারি, শিক্ষাসফর এমনকি স্কুলে যাতায়াত সবকিছু বিনামূল্যে শিক্ষার্থীরা পেয়ে থাকে। শিক্ষাসংক্রান্ত সমস্ত খরচ সরকার বা রাষ্ট্র বহন করে থাকে।
যুক্তরাজ্য

উন্নত বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে যুক্তরাজ্য অন্যতম। সেই দেশে পরীক্ষা পদ্ধতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। বোর্ডের পরীক্ষা কর্মকর্তারাই গ্রহণ করে থাকেন। এ ব্যাপারে কোনোভাবেই শিক্ষকদের যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। এমনকি একটি স্কুল একাধিক বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন বিষয়ের পরীক্ষা দিতে পারে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান এর যে বোর্ড কে ভালো লাগে তারা সেই বোর্ডের অধীনেই পরীক্ষায় অংশ নেয়। এতে বোর্ড গুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকে। ফলে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কোন সুযোগ থাকেনা।
আরো দেখুন- করোনা ভাইরাসের বিস্তারিত রিয়েল টাইম আপডেট
জাপান

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের পুননির্মান ও বাণিজ্যিক সাফল্যে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে শিক্ষা। জাপানের প্রাথমিক বিদ্যালয় আর জুনিয়র হাইস্কুল হচ্ছে বাধ্যতামূলক শিক্ষার পর্যায়। জাপানি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার আগ পর্যন্ত স্কুল বা কলেজ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয় না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গাইডলাইন অনুসারে তৈরি ‘’ল’’ এর ভিত্তিতে পরিচালিত হয় পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা। দেশটিতে কোনো শিক্ষাবোর্ড ও নেই।
সিঙ্গাপুর

স্কুল পর্যায়ে সিঙ্গাপুরের শিক্ষা ব্যবস্থা এতটাই ভাল যে, এখন তাদের অনুসরণ করছে পশ্চিমা দেশগুলো। ক্লাসের শিক্ষায় তাদের প্রতিদিনের জ্ঞান অর্জনের অন্যতম মাধ্যম। পরীক্ষা নিয়ে তেমন চাপ নেই। তবে বিজ্ঞান রিডিং ও গণিত বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মান যাচাইয়ের পদ্ধতি হচ্ছে “পিসা”। শুধু এই পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নেয়া হয়। সেজন্য কিছুটা বাড়তি চাপে থাকে শিক্ষার্থীরা।
জার্মানি

ইউরোপে সুপরিচিত শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে জার্মানির সুখ্যাতি রয়েছে। জার্মান শিক্ষাব্যবস্থা বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় উচ্চমানের। আইনগতভাবে, জার্মান প্রতিটি শিশুর রয়েছে শিক্ষার ওপর সমানাধিকার ৷ তা সে কোনো অভিবাসী পরিবারের শিশু হোক বা কোনো ‘বিশেষভাবে সক্ষম’ শিশু, আইন সবার জন্যেই সমান ৷ তাদের স্কুলগুলিতে কারিগরি ও সৃজনশীল শিক্ষার উপরে নজর দেওয়া হয়। সেজন্য প্রচুর পরীক্ষা দিতে হয় না। কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় বছরে একবার মাত্র পরীক্ষা নেয়া হয়। যেখানে শিক্ষার্থী কত নম্বর পেল তা নয় বরং দেখা হয় তার সৃজনশীলতা।
শিক্ষার সকল খবর পেতে Shikkhapedia.com এর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে যুক্ত থাকুন।
সবসময় রিয়েল টাইম নিউজফিড পেতে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন