
করোনার টিকা নেওয়ার পর রক্তদান ও গ্রহণ নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। ফলে রক্তদাতা ও গ্রহীতারা সংকটে পড়েছেন। টিকা নেওয়ার পর রক্তদান ও গ্রহণ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ওয়েবিনার করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতা সংগঠন রক্তিমা। এতে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কোনো ব্যক্তি করোনার টিকা নেওয়ার ২৮ দিন পর রক্তদান ও গ্রহণ করতে পারবে।
কভিড-১৯ টিকা গ্রহণের পর রক্তদান’ শীর্ষক এই ওয়েবিনারটি বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত হয়। এতে রক্তিমার উপদেষ্টা ইবির ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মেহের আলীর সভাপতিত্বে মূল গবেষক হিসেবে বক্তব্য দেন দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এমএ গফুর। গবেষক ও টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের উপনির্বাহী পরিচালক ডা. মতিউর রহমান, ইবির বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক রেজওয়ানুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রক্তিমার উপদেষ্টা অধ্যাপক জাকির হোসেন, রক্তিমার কার্যক্রম তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি সাকিব সারওয়ার। উপস্থাপনা করেন সংগঠনটির সদস্য উম্মে হাবিবা হ্যাপি। অনুষ্ঠানে ডা. মতিউর রহমান টিকা সম্পর্কে বিস্তারিত স্লাইড উপস্থাপন করেন।
আলোচনায় অধ্যাপক ডা. এমএ গফুর বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী টিকা নেওয়ার ২৮ দিন পর কোনো ব্যক্তি রক্তদান বা গ্রহণ করতে পারবেন। তবে খুব জরুরি হলে ১৪ দিন পরও রক্ত দেওয়া বা নেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে এক ডোজ বা দুই ডোজ নেওয়ায় কোনো সমস্যা হবে না। রক্তদানের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ হতে হবে ১২। মেয়েরা সাধারণত পিরিয়ডের তিন থেকে পাঁচ দিন পর রক্ত দিতে পারবে।
অধ্যাপক রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, টিকার কাজ দুটি। প্রটেকশন ও মেমোরি সেল তৈরি। কোনোভাবেই রক্ত বাড়িতে বা অভিজ্ঞ ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে ট্রান্সফিউশন করা যাবে না। একজন দাতা যে পরিমাণে রক্তদান করেন, তাতে টিকা নেওয়ার পর শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তা অন্যের শরীরের জন্য যথেষ্ট নয়। যার শরীর থেকে যাচ্ছে তারও কোনো ক্ষতি হবে না। যদি দাতার অন্য কোনো বড় সমস্যা না থাকে, তবে রক্ত আদান-প্রদানে কোনো সমস্যা নেই।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মেহের আলী বলেন, সারাদেশে বিভিন্ন কারণে মানুষের নিয়মিত রক্তদান ও গ্রহণের প্রয়োজন হয়। করোনাকালে বিভিন্ন দিক নিয়ে খুঁটিনাটি আলোচনা হলেও টিকা গ্রহণের পর রক্তদান সম্পর্কে তেমন কোনো আলোচনা চোখে পড়েনি। এই বিষয়ে আলোচনা রক্তদাতাদের উৎসাহিত করবে ও জনসচেতনতা বাড়াবে।