
শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য নিরসন সময়ের দাবি
বেসরকারি স্কুল-কলেজের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোর সংশোধনী চুড়ান্তকরণের লক্ষ্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপুমনির সভাপতিত্বে ৯ জুলাই বিকাল সাড়ে তিনটায় ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হবে।শিক্ষায় বৈষম্য নিরসন ও সুব্যবস্থাপনার জন্য এ সভা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের বাতিঘর এ সভায় বেসরকারি শিক্ষা বিভাগে বেশকিছু আশু ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রত্যাশা অনেকের।
বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষাবিভাগ একটি বড় অংশ। মাধ্যমিক শিক্ষায় মাত্র ৩% বিদ্যালয় সরকারি আর বাকি ৯৭% বিদ্যালয় বেসরকারি। শিক্ষা বিস্তারে এবং দেশমাতৃকা বিনির্মানে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখে চলেছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু, সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা রয়েছে পেছনের সারিতে। চরম বৈষম্যের শিকার বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারিগণ।সরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকগণ যে পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে পাঠদান করেন- বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকগণও তা করেন। যোগ্যতার ক্ষেত্রেও একই বিধি-বিধান অনুসরণ করা হয়। কিন্তু, বেতন-ভাতার ক্ষেত্রে তা উল্টো।
একজন বেসরকারি শিক্ষক সরকারি বিধি মোতাবেক আনুষ্ঠানিকতা শেষে যোগদান করার পরও অনেক ক্ষেত্রে এমপিওভুক্ত হতে অনেক সময় লেগে যায়। সেক্ষেত্রে, অভিজ্ঞতা গণনা করা হয় এমপিওভুক্তি থেকে যা একজনের জন্য চরম হতাশার।দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি শিক্ষকগণ বদলিব্যবস্থা চালু করার দাবি জানিয়ে আসছে।কিন্তু, সঠিক কোন নির্দেশনা এখনো পাওয়া যাচ্ছেনা।পদোন্নতিতে ৫ঃ২ পদ্ধতি একটি কালো প্রথা। এ প্রথায় ২৮% প্রভাষক ৮ বছর পর ৬ষ্ঠ গ্রেড পায় এবং আর্থিক সুবিধা পায় ১৩,৫০০ টাকা।আর, ৭২% প্রভাষক ১০ বছর পর গ্রেড পায় ৮ম এবং আর্থিক সুবিধা পায় ১,০০০ টাকা।
আরো পড়ুন- কষ্টদায়ক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি স্বেচ্ছাসেবীরা
এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশকৃত নন-বিএড একজন শিক্ষক ১২,৫০০টাকা বেসিকে যোগদান করেন।তার সাথে বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা যোগ হয়ে দাঁড়ায় ১৪,০০০ টাকা এবং তা থেকে কর্তন করা হয় ১০%। বাকিটুকু দিয়ে পুরো মাস চলে তাঁর সংসার।বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেসরকারি শিক্ষকদের এমন অবস্থা। তবুও শিক্ষকতা চলছে, দেশ বিনির্মানে আমরাই সবার আগে।সহকারী প্রধান শিক্ষকগণের স্কেলটিও বড়ই বেমানান। পুরো স্কুল নিয়ে পড়ে থাকতে হয় সারাদিন অথচ বেতনের বেলায় সিনিয়র শিক্ষক থেকে মাত্র ১,১০০ টাকা বেশি। প্রধান শিক্ষকগণ ও সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকগণ থেকে এক গ্রেড নিচে বেতন পায়। এতসব কিছুর পরও আমরা সোৎসাহে এগিয়ে যাচ্ছি সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে। তাই শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য নিরসন সময়ের দাবি ।
অনুষ্টিতব্য সভায় বেসরকারি শিক্ষকদের বাড়িভাড়া, চিকিৎসাভাতা, ১০০% উৎসব বোনাস,পেনশন সুবিধা, উচ্চতর গ্রেড, ৫%২ প্রথা, পদোন্নতি, বেতন বৃদ্ধি এবং অনার্স-মাস্টার্স কলেজের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি প্রভৃতি যথাযথ আলোচনা সাপেক্ষে সুন্দর সোনার বাংলা গড়তে সহায়ক চুড়ান্ত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সকল বৈষম্য নিরসন করা হবে -এ প্রত্যাশা আমাদের সকলের।
লেখকঃ ম.শাহানূর আলম খাঁন সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি), বাংগরা উমালোচন উচ্চবিদ্যালয়, মুরাদনগর, কুমিল্লা
শিক্ষার সকল খবর পেতে Shikkhapedia.com এর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে যুক্ত থাকুন।
সবসময় রিয়েল টাইম নিউজফিড পেতে আমাদের ফেইসবুক পেইজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন