
শিক্ষার্থীদের চাওয়াকে’ প্রাধান্য দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে পরীক্ষা নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ।
বৃহস্পতিবার সকালে ও বিকেলে বিভাগের মাস্টার্স ও অনার্স শেষ বর্ষের দুই সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণ করে বিভাগটি। সকালে বিভাগের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টার এবং বিকেলে অনার্স চতুর্থ সপ্তম সেমিস্টারের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় শতভাগ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এতে মাস্টার্সের ৫৩ জন এবং চতুর্থ বর্ষের ৬৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
শারীরিক দূরত্ব ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাস্ক পরার বিষয়টি নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেওয়া হয়। মোট দুইটি কক্ষে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ দূরত্বে বসার ব্যবস্থা করা হয় এবং তাদের পানি সরবরাহ করা হয়। পরীক্ষা কক্ষে ঢোকার আগে শিক্ষার্থীদের হাত স্যানিটাইজের ব্যবস্থা করা হয়৷
একই নিয়মে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর থেকে এই বিভাগের প্রথম, তৃতীয় ও পঞ্চম সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষাও শুরু হবে।পরীক্ষা গ্রহণে ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সোহান ইসলাম বলেন,পরীক্ষা নেয়ার ফলে আমাদের মধ্যে সেশনজটের আশঙ্কা দূর হয়েছে।
স্বাস্থ্যবিধি এবং নিরাপদ দূরত্বে বসে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবস্থা ছিল। তবে যেসব শিক্ষার্থীরা জেলা শহর থেকে ঢাকায় এসে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে, তারা কতটুকু স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকায় এসে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে সে বিষয়ে বিভাগের কার্যকর পদক্ষেপের বিষয়ে সংশয় রয়েছে।
একই শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী সৈকত গুপ্ত বলেন, স্বাস্থ্যবিধি খুব ভালোভাবে মানা হয়েছিল। পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগে সবাইকে স্যানিটাইজ এবং যাদের মাস্ক ছিলো না তাদেরকে মাস্ক সরবরাহ করা হয়েছিলো। মাস্টার্সে ইতোমধ্যে আমাদের ১ বছর ৮ মাস চলে গেছে, এইভাবে আরো কতদিন যায় এই নিয়ে একটা দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলাম। এখন দুশ্চিন্তা কিছুটা কেটে গেছে। এই করোনাকালে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়াটা একটা চ্যালেঞ্জিং বিষয় ছিলো। প্রথম পরীক্ষা দিয়ে মনে হলো এতে আমাদের বিভাগ অনেকটাই সফল।
চতুর্থ বর্ষের শ্রেণি প্রতিনিধি গাজী হীরক বলেন, সেশনজট রোধে আমাদের বিভাগ অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে, এটা খুবই ভালো একটি সিদ্ধান্ত। অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো আটকে থাকায় শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ সেশনজটে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
এমন পরিস্থিতিতে গত জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট অনলাইনে চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেছে। ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ বিভাগের চেয়ারপারসন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহাম্মদ।
তিনি বলেন, পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে আমি এবং কোর্স কো-অর্ডিনেটর দুইজনই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলি। তখন তারা অনলাইন পরীক্ষার নানাবিধ সমস্যার কথা উল্লেখ করে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে মত দেয়।
তাদের মতামতকে সামনে রেখে বিভাগের একাডেমিক কমিটির মিটিংয়ে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভাগ থেকে পরীক্ষার রুটিন প্রণয়ন করে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের মাধ্যমে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দফতরে পাঠানো হয়। সেটি অনুমোদনের পর আমরা এই পরীক্ষা গ্রহণ করি।