
২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সোনাকান্দা দরবার শরীফের বার্ষিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিল শুরু
ম. শাহানূর আলম খাঁন, মুরাদনগর, কুমিল্লা ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরাবাজার থানাধীন ঐতিহ্যবাহী সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফের দু’দিনব্যাপী ঐতিহাসিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিল ২৭ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) বাদ জোহর থেকে শুরু হবে। ১ মার্চ (সোমবার) বাদ ফজর দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে মাহফিল শেষ হবে। এ উপলক্ষে শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সোনাকান্দা দরবার শরীফের গদ্দীনশিন পীর ও বাংলাদেশ তা’লীমে হিযবুল্লাহ’র আমীর অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা মাহমুদুর রহমান।
দৈনিক,সাপ্তাহিক প্রিন্ট , ইলেকট্রনিক, অনলাইন ও আকাশ মিডিয়ার সাংবাদিকগণ এতে অংশগ্রহণ করেন।
দরবারের পক্ষ হতে জানানো হয় -মাহফিল উপলক্ষে মুসুল্লিদের বসার জন্য ৬টি প্যান্ডেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও আগত দূরবর্তী মেহমানদের থাকা, খাওয়া, অযু, গোসল, টয়লেট এর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮টি টার্মিনাল। কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কের মেটংঘর থেকে শ্রীকাইল পর্যন্ত এবং নবীপুর থেকে শ্রীকাইল পর্যন্ত রাস্তা দু’টি যানযট মুক্ত রাখতে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, অসুস্থ্ হয়ে পড়া রোগীদের জন্য বিশেষ ও দ্রুত চিকিৎসা সেবা প্রদান ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এতে দেশ-বিদেশের ওলামায়ে কেরাম ও বিভিন্ন দরবার শরীফের পীর মাশায়েখগণ বয়ান করবেন।
দুইদিনব্যাপী মাহফিলে আত্নশুদ্ধি,ঈমান,মাদকাসক্তির কুফল, যুবসমাজের অবক্ষয় ও উত্তরণের উপায়সহ কুরআন ও সুন্নাহ থেকে আলেমে দ্বীনগণ বয়ান করবেন।
উক্ত মাহফিলে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক নেতৃবৃন্দসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক লোকের সমাগম হবার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে উপস্থিত থেকে দুনিয়া ও পরকালের অশেষ ছাওয়াব হাসিল করার জন্য দরবার শরীফের পীর, বাংলাদেশ তা’লীমে হিজবুল্লাহ’র আমীর অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাওলানা মাহমুদুর রহমান ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাইদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সময়ের ঐতিহ্যধন্য আধ্যাত্মিকতার সূতিকাগার এ দরবার শরীফ এশিয়া মহাদেশে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাক ভারত উপমহাদেশের মধ্যে দ্বীনের দাওয়াত ও খেদমতে যাঁরা আঞ্জাম দিয়েছেন তন্মধ্যে সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফের দাদা হুজুর বাগদাদ ও ফুরফুরা শরীফ থেকে খেলাফত প্রাপ্ত শাহ্সুফি আলহাজ্ব মাওলানা হাফেজ আব্দুর রহমান হানাফি (রহ.) অন্যতম। তিনি তাঁর জীবনকে সর্বদা দ্বীন প্রচার এবং ইবাদত, বন্দেগী, মোরাকাবা-মোশাহাদায় নিমগ্ন রাখতেন। আত্মশুদ্ধির সর্বোচ্চ শিখরে সমাসীন হতে নিজেকে আজন্ম আধ্যাত্ম সাধনায় নিযুক্ত রেখেছেন। দ্বীনের উপর তাঁর আত্মত্যাগ ও সাধনা দেখে লক্ষ লক্ষ মুসলমান তাঁকে অনুসরণ করেছেন।
বিশেষ করে এ দেশের মুসলিম মিল্লাতের নৈতিক অধ:পতন থেকে চারিত্রিক উন্নতি ও আমলের অগ্রগতির ক্ষেত্রে তাঁর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। তিনি তাঁর এ দাওয়াতি কাজ চালু রাখার জন্য বহুযুগ আগ থেকে তাঁর দরবারে প্রতিবছর বার্ষিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৪ সালে তাঁর ইন্তেকালের পর তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরী বড় সাহেবজাদা শাহসুফি আলহাজ্ব মাওলানা আবুবকর মোহাম্মদ শামসুল হুদা (রহ.) আব্বাজানের খেদমতকে অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগের মাধ্যমে গোটা দেশে আঞ্জাম দিয়েছেন। মানুষকে দ্বীনমূখী করার জন্য তাঁরা উভয়েই দেশের বিভিন্ন জেলায় অসংখ্য মাদরাসা, মসজিদ, খানকাহ, মক্তব, মুসাফির ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেছেন। ২০০৫ সালে তিনি যখন ইন্তেকাল করেন তখন তাঁর সুযোগ্য বড় সাহেবজাদা আলহাজ্ব মাওলানা মাহমুদুর রহমান তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। তিনিও নিরলস ভাবে দেশ-বিদেশে দ্বীনের দাওয়াতি কাজ ইন্তেজামে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।